নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে একটি পোশাক কারখানায় উৎপাদন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ দেখে ভয়ে এক নারী মারা গেছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ২০ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিসিকের ‘এন আর গার্মেন্টস’ নামে কারখানার শ্রমিকরা ওই বিক্ষোভ করে। এতে করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও মুক্তারপুর সড়কের তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে রাস্তায় নেমে এলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত শ্রমিকের নাম বুবলী বেগম (৪৫)। সে নওগাঁ জেলার পাঁচচাটিয়া এলাকার সেলিম মিয়ার স্ত্রী। তারা ফতুল্লা শাসনগাঁও এলাকার বাসিন্দা। এন আর গার্মেন্টসের শ্রমিক।
শ্রমিকরা জানান, গত তিন দিন ধরে এনআর গার্মেন্টস শ্রমিকরা অত্যাধুনিক মেশিনের উৎপাদন মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় মালিকপক্ষ এতে অস্বীকার জানালে বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে।
এ সময় শ্রমিকরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় শ্রমিক পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। থেমে থেমে চলতে থাকে সংঘর্ষ।
দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদীসহ অন্তত ২০ জন সাধারণ শ্রমিক আহত হয়। এ সময় পুলিশ উত্তেজিত হয়ে বহিরাগতদের লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনার কারণে বিসিকসংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনার পর বিসিক শিল্পনগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাহমিনা নাজনীন বলেন, নিহত নারীর শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ভয় পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। তাছাড়া ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে গেছে স্বজনরা।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের বলেন, পরিস্থিত শান্ত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে।